Menu

Drop Down MenusCSS Drop Down MenuPure CSS Dropdown Menu

Thursday, January 15, 2015

পুরস্কার এবং নিয়মাবলি

-------------------
পুরস্কারঃ সঠিক উত্তর দাতা থেকে ৫ জন কে লটারির মাধম্য বাছায় করে ৫০ টাকা করে ফ্লেক্সি করা হবে। (পরবর্তী কুইজ গুলাতে পুরস্কার আরো বাড়বে)
--------------------
নিয়মঃ
১। একজন শুধুমাত্র সর্বোপরি একবার জিততে পারবেন একটি কুইজে।
২। অবশ্যই বিজয়ীর ফোনে গল্প অ্যাপ ডাউনলোড এবং ইনস্টল থাকা লাগবে।
৩। বাংলাদেশে অবস্থাকারী এবং বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
৪। বয়স ১৪ ঊর্ধ্ব হতে হবে।

Thursday, January 1, 2015

সংকলন ২- নোমান আলী খানের উদ্ধৃতি, খন্ড-১

“আপনি যখন কুরআন তিলাওয়াতের স্বাদ হৃদয়ে আস্বাদন করতে শুরু করবেন, তখন বুঝবেন কোন সঙ্গীত আপনাকে সেই অসাধারণ অনুভূতি দিতে পারবে না। গান-বাদ্য হালাল নাকি হারাম এমন ফাতওয়া আপনি তখন আর খুঁজতে যাবেন না, গান-বাজনা আপনার কাছে স্রেফ অপ্রয়োজনীয় বাজে ব্যাপার বলে মনে হবে।”


“জোর করে দেয়া বিয়েগুলো যে কতটা অ-ইসলামিক এবং নিষ্ঠুর সেই বিষয়ে আমাদের উচিত সমাজের মাঝে সশ্রদ্ধ ও উন্মুক্ত আলাপ-আলোচনা শুরু করা।”


​​”​ইসলাম সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে দূর করার নির্দেশ দেয় না, বরং সংস্কৃতিকে অন্যায় ও অনৈতিক চর্চাগুলো থেকে মুক্ত রাখতে চায়।”


“অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস আপনাকে দাম্ভিক ও উদ্ধত করে তুলতে পারে এবং অতিরিক্ত নম্রতা আপনাকে এমন অযোগ্য করে তুলতে পারে যে আপনি কোন কাজই পূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন না। ইসলাম এই দুটোর মধ্যবর্তী একটি পথ।”



​”আপনি যেসব জিনিস দেখছেন, যা শুনছেন এবং যেসব জায়গায় যাচ্ছেন তা আপনার চরিত্রের উপরে প্রভাব রাখবে না –এটা আপনি কিছুতেই ধরে নিতে পারেন না। এগুলো অবশ্যই আপনার চরিত্রকে প্রভাবিত করবে।​”



“নোংরা ও বাজে ভাষা ব্যবহার করে সেসব লোকেরাই কথা বলে যাদের সুন্দর ভাষা ব্যবহার করে কথা বলার মতন যথেষ্ট জ্ঞান হয়নি অথবা বয়সের পরিপক্কতা আসেনি।”



“দ্বীনের নামে অন্যদেরকে অপদস্ত করা সেই ব্যক্তির অভ্যাস যে দ্বীনের প্রথম ফলটির স্বাদ আস্বাদন থেকে বঞ্চিত যা হলো বিনয়।”


“আপনার পাপগুলো আল্লাহর দয়ার চেয়ে বড় নয়।”


“আপনি যখন কাউকে সাহায্য করার সুযোগ পেয়ে থাকেন, তখন আনন্দিত হোন এইজন্য যে আল্লাহ ঐ ব্যক্তির দোয়ার সাড়া আপনার মাধ্যমেই দিচ্ছেন।”


“আপনি যদি ন্যায় বিচারে বিশ্বাসী হোন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আখিরাতকে বিশ্বাস করতে হবে। কারণ, কেবলমাত্র এই দুনিয়াটা ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়।”


উৎস- http://islamicquotesbangla.com/









সংকলন ১- কুরআনের সাথে সম্পর্ক-নোমান আলী খান, পর্ব - ০১

অনুবাদ করেছেনঃ সানজিদা হাসনিন
ফেইসবুক ফ্যানপেইজঃ Nouman Ali Khan Collection In Bangla

আজকের খুতবার একদম শুরুতে আমি দুটো কথা বলে নিতে চাই, প্রথমত এই যে, অনেক দীর্ঘ সময় নিয়ে ভাবনা চিন্তার পর আজকে যে বিষয়টি আমি বেছে নিয়েছি, এটা খুব কঠিন এবং জটিল। যদিও আমি যখন খুতবার জন্য কোন বিষয় নির্বাচন করি সাধারণত আমি চেষ্টা করি সেটাকে যতটা সহজ করা যায়। কিন্তু আমি মনে করি এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা সব মুসলিমদের জন্য যথেষ্ট জরুরী এবং ভীষণ গুরুত্বপুর্ণ তাই আমি আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বালের কাছে প্রার্থনা করছি যেন আজকের বক্তব্যে আমি আমার ভাবনাগুলো খুব পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে পারি যাতে আপনারা এ থেকে উপকৃত হতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, যখনই আমি এখানে এলাম আমি দেখলাম আমাদের ইমাম সাহেব এখানে বসে আছেন, আমার মনে হলো আরবীতে একটা কথা আছে, “আগনাস সাবা আনীল মিসবাহ”, যার মানে হলো, “সময়টা যখন সকাল, আপনার বাতির প্রয়োজন নেই”(স্মিত হাসি)। আমি ঠিক জানি না আমাকে কেন খুতবা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত করা হয়েছে যেখানে ইমাম সাহেব স্বয়ং উপস্থিত আছেন। যা হোক, যেহেতু আমি এখন এ জায়গায় আছি, ইন শা আল্লাহ আশা করছি আমি এ সুযোগটা সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে পারবো।
আজকের এই সংক্ষিপ্ত খুতবায় আমি কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কের দুইটি দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বাল কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে বর্ণনা করেছেন বিভিন্ন ভাবে। এটা শুধু এক ধরণের সম্পর্ক নয়, কুরআনের সাথে আমাদের সম্পর্কটা বিভিন্ন ধরণের। যেমন ধরুন এটা (কুরআন) একটা স্মরণিকা নিজের জন্য আবার এটা অন্যকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার একটা মাধ্যমও ।এটা জিকির বা স্মরণিকা আমাদের নিজেদের জন্য এবং কুরআন একটা মাধ্যমও যাতে আমরা অন্যদেরকেও স্মরণ করিয়ে দিতে পারি।
এটা চিন্তা করার মতো বিষয় এবং আমাদেরকে বার বার বলা হয়েছে যাতে আমরা কুরআনকে নিয়ে চিন্তা করি, খুব মনযোগ দিয়ে শুনি এবং গভীর ভাবে ভাবি। এই “গভীর করে ভাবা” ব্যাপারটা নিয়েই আজকে আমি বিশেষভাবে বলতে চাই। এটা শুরু হয়েছে সুরা মুহাম্মাদ এর এই আয়াত দিয়ে “আফালা ইয়াতাদাব্বারুনাল কুরআন” – আল্লাহ্ প্রশ্ন করছেন, “কেন ওরা কুরআন নিয়ে গভীরভাবে ভাবে না?” (৪৭:২৪)
যখন কুরআন নিয়ে কথা আসে, কেন ওরা গভীর ভাবনায় ডুবে যায় না? কেন ওরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করে না? ‘তাদাব্বুর’ শব্দটা এসেছে ‘দুবর’ থেকে যার মানে হছে, কোন কিছুর নিচে, কোন কিছুর পেছনে। আর ‘তাদাব্বুর’ মানে হলো যখন আপনি কিছু শোনেন এটা শুধু উপরভাগ , এই কথাটাতে কী বলা হয়েছে, এই বক্তব্যের গুরুত্ব কতখানি তা বুঝতে আপনাকে ঐ বক্তব্যের পেছনে কী আছে এনিয়ে খুব গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। অন্যভাবে বলতে গেলে, এতে (কুরআনে) গভীরতা আছে, এবং এর বক্তব্য বুঝতে চাইলে আপনাকে এর গভীরে ডুব দিতে হবে। এর একটা দৃশ্যত উদাহরণ হতে পারে, সমূদ্র। আপনি সমূদ্রের দিকে তাকালে সমূদ্রের উপরিভাগটা দেখতে পারেন কিন্তু আপনাকে মানতে হবে যে এর নিচে অনেক কিছু ঘটে চলছে। আর সমূদ্রের তলদেশে আছে অনেক মূল্যবান বিষয় এবং অনেক বেশি গভীরতা যা আমরা চোখে দেখতে পাই না। আপনি সমূদ্রের উপরিভাগ দেখেছেন তার মানে এই নয় যে আপনি এর গভীরে কি আছে জেনে ফেলেছেন। তা জানতে আপনাকে কিছু বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে, কিছু অভিযান চালাতে হবে, যাতে আপনি বুঝতে পারেন এই সমূদ্রের গভীরে আসলে কি আছে।
আল্লাহ্ আজ ওয়াজ্বাল যখন কুরআনে “গভীর ভাবে ভাবার” কথা বলেন কোইতুহল উদ্দীপক ব্যাপার হচ্ছে উনি প্রায় একইরকম কথা বলেছেন দুবার। উনি বলেছেন, “আফালা ইয়াতাদাব্বারুনাল কুরআন” “কেন ওরা কুরআন নিয়ে গভীরভাবে ভাবে না?” অথবা “ওরা কী ভাবে না গভীরভাবে কুরআন নিয়ে?”

কিন্তু একবার আল্লাহ্ যখন এই সমস্যা নিয়ে বলছেন যে মানুষ গভীরভাবে ভাবে না, উনি বলেছেন সমস্যাটা আসলে হৃদয়ের। তিনি বলেছেন- أَمْ عَلَىٰ قُلُوبٍ أَقْفَالُهَا ''না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ?'' ব্যাপারটা এমন যে তাদের হৃদয় তাদের নিজেদের তালায় বন্দী। কুরআনে এই হৃদয় বিষয়ক সমস্যা বিভিন্নভাবে বর্নণা করা হয়েছে এটা একটা আত্মিক সমস্যা আশা করছি আপনারা সবাই এটা বুঝতে পারছেন। যখন মানুষ আল্লাহ্ যিকর করে না, আল্লাহ্কে স্মরণ করে না, তাদের হৃদয়ে আল্লাহ্র ভয় কাজ করে না, আল্লাহ্ প্রতি ভালোবাসা কাজ করে না তখন তাদের হৃদয় বন্দী হতে শুরু করে।
যখন মানুষের চোখ, কান এমনসব কিছুতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে যা তাঁকে আল্লাহ্র স্মরণ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়, তখন তাদের হৃদয় কঠিন হতে শুরু করে। তো আল্লাহ বলছেন তোমরা অন্য সব কিছু নিয়ে এতো বিক্ষিপ্ত হয়ে আছ যে তোমার হৃদয় কুরআন নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে বা আত্মস্থ করতে আর আগ্রহীই নয়। এটা একটা আত্মিক সমস্যা যা আল্লাহ্ সুরা মুহাম্মদ-এ উল্লেখ করেছেন।
আবার কুরআনের অন্যত্র আরেক প্রসঙ্গে আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বাল বলেছেন, (أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ الْقُرْآنَ ۚ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِندِ غَيْرِ اللَّهِ لَوَجَدُوا فِيهِ اخْتِلَافًا كَثِيرًا ’’এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত।‘’ সুরা নিসা- ৮২) এটা অন্য আরেকটি জায়গা যেখানে আল্লাহ্ একই কথা উল্লেখ করেছেন। এবং ঊনি (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) বলেছেন, ওরা কী কুরআনকে নিয়ে গভীরভাবে ভাবে না ? যদি এটা অন্য কারো রচিত হতো, এর মধ্যে অনেক বৈপরিত্য থাকতো। যদি কুরআন আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো কাছ থেকে আসতো, ওরা কুরআনের মধ্যে অনেক বৈপরীত্য, অনেক মতবিরোধী বক্তব্য খুঁজে পেতো। এর এক দিক থেকে অন্য দিকের বিরোধ থাকতো ।
কুরআনের মধ্যে এই ধারাবাহিক মিলের ব্যাপারটা খোঁজা বা এর ভেতরকার পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য খুঁজে বের করা এটা কোন আধ্যাত্মিক চর্চা নয় এটা একটা বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা। যখন আপনি কোন বই পড়েন এবং বলেন যে ৫ নাম্বার অধ্যায় ৩ নাম্বার অধ্যায়ের সাথে পরষ্পর বিরোধী, অথবা আপনি বলছেন যে এই পৃষ্ঠার কথা ঐ পৃষ্ঠার কথার সাথে মিলছে না, অথবা এই ফর্মুলাটা ঐ ফর্মূলার সাথে যায় না অথবা এই বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত ঐ বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তের সাথে খাপ খায় না, যখন আপনি এধরণের সামঞ্জস্যতা বা অসামঞ্জস্যতার খোঁজ করছেন, কিংবা এরকম অভ্যন্তরীন মিল বা অসঙ্গতির খোঁজ করছেন আপনি আসলে বুদ্ধিভিত্তিক আলোচনা করছেন, ব্যাপারটা আধ্যাত্মিক নয়।

আমি বলতে চাচ্ছি যে, একদিকে আল্লাহ্ আ’জ্জা ওয়াজ্বাল বলছেন, কুরআন কে নিয়ে গভীরভাবে ভাবা বা না ভাবা একটা আধ্যাত্মিক সমস্যা আবার অন্যদিকে ''কুরআন নিয়ে না ভাবার'' বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন ঃ যদি তুমি সত্যিকার ভাবে ভাবতে তাহলে তুমি নিশ্চিতভাবে জানতে পারতে যে এর মধ্যে কোন মতবিরোধ নেই তাই এটা কোন মানুষের কথা হতে পারে না, এটা শুধুমাত্র আল্লাহ্র কথাই হতে পারে এবং তুমি (Intellectually convinced) বুদ্ধিবৃত্তিকভাবেই সন্তুষ্ট হতে এবং তোমার বুদ্ধি থেকেই এই সত্যে পৌঁছুতে পারতে।
কুরআনের একটি চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে আল্লাহ্ আ’জ্জা ওয়াজ্বাল কখনো উল্লেখ করেছেন হৃদয়ের(অনুভব করার) কথা আবার কখনো উল্লেখ করেছেন মনের (চিন্তা করার) কথা। কখনো আল্লাহ্ বলেছেন “আল ক্বা-ল্ব”(হৃদয়, অন্তর) আবার কখনো বলেছেন “আল আ’ক্বাল”(বিবেক, বুদ্ধি, চিন্তা)। আর মজার ব্যাপার হছে এই দুটো শব্দের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম প্রয়োগ হয়েছে কুরআনে।


শুধু কিছু উদাহরণ, যদিও আক্ষরিক অর্থেই এর ডজনের পর ডজন উদাহরণ আছে কুরআনে, আমি এখানে কিছু বিষয় তুলে ধরতে চাই ইন শা আল্লাহু তায়ালা, যাতে এই আলোচনার ধারাবাহিকতা ও যৌক্তিকতা বজায় থাকে। আল্লাহ্ আ’জ্জা ওয়াজ্বাল সুরা বাক্বারায় বনী ইসরাঈলদের নিয়ে বলছেন, আপনারা সবাই জানেন বনী ইসরাঈলদের নিয়ে খুব বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে, (আর গল্পটা হচ্ছে এক ধনী চাচার সম্পদ আত্মসাত করার জন্য তাকে হত্যা করা হয়, হত্যাকারীকে খঁুজে বের করার জন্য ইসরাঈলীরা মূসা আঃ এর নিকট দাবী জানায়। তখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে একটি গরু জবাই করে ঐ গরুর কোন একটি অংশ দিয়ে লাশকে আঘাত করতে বলেন। এটা করা হলে আল্লাহর হুকুমে মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়ে হত্যাকারীকে শনাক্ত করে)
তো একটা গরু জবাই করা হয়েছিলো যাতে খুনি ব্যক্তিকে বের করা যায়। فَقُلْنَا اضْرِبُوهُ بِبَعْضِهَا ۚ كَذَٰلِكَ يُحْيِي اللَّهُ الْمَوْتَىٰ وَيُرِيكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
''অতঃপর আমি বললামঃ গরুর একটি খন্ড দ্বারা মৃতকে আঘাত কর। এভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শণ সমূহ প্রদর্শন করেন-যাতে তোমরা চিন্তা কর।'' (আল-বাকারা ৭৩)


ইস্রায়িলিদের বলা হয়েছিলো যাতে তারা এক টুকরো গোস্ত নিয়ে মৃত ব্যক্তির লাশের প্রতি ছুড়ে মারে, তখন মৃত জীবিত হয়ে উঠবে এবং হত্যাকারীর দিকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করবে, كَذَٰلِكَ يُحْيِي اللَّهُ الْمَوْتَىٰ এভাবেই আল্লাহ্ মৃতকে জীবন দান করেন, এভাবেই এই কাহিনীটা বর্ণনা করা হয়েছে। এবং এরপর আল্লাহ্ ইসরাঈলীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, উনি তোমাদের এই সকল অলৌকিক দৃষ্টান্তগুলো দেখান যাতে তোমরা চিন্তা কর, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পারো, তোমরা তোমাদের ‘আ-ক্বাল’ প্রয়োগ করতে পারো। এবং এর ঠিক পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, ثُمَّ قَسَتْ قُلُوبُكُم مِّن بَعْدِ ذَٰلِكَ ’’তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গিয়েছে।‘’ প্রথমে আল্লাহ বললেন, তুমি চিন্তা করতে অস্বীকৃতি জানালে, আমি আয়াত দিয়েছি যাতে তোমরা চিন্তা করতে পারো, যেহেতু তোমরা চিন্তা কর না তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গিয়েছে। আল্লাহ্ এটা বলেননি যে তোমাদের ' 'চিন্তা করার ক্ষমতা' ' কঠিন হয়ে গিয়েছে, উনি বলেছেন তোমাদের হৃদয় কঠিন হয়ে গিয়েছে। সুবহান আল্লাহ!

আগের সমস্যা ছিলো, কেন তোমরা চিন্তা কর না? তারপর যে সমস্যা প্রকট হয় তা আধ্যাত্মিক।

একই ভাবে আপনি দেখবেন সুরা হাদীদ-এ আছে, আল্লাহ্ আজ্জা ওয়াজ্বাল বলছেন হৃদয় নিয়ে, তাদের অন্তর কঠিন হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ লোকই দুর্নীতিপরায়ণ। উনি বলছেন, আহলে কিতাবদের কথা।


فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ ۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ
৫৭: ১৬
''তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।'' তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, তাদের ধর্ম ছিল পরিশুদ্ধ, সুন্দর এরপর এতে এসে গেলো দুর্নীতি, অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়ে শুধু থাকলো কিছু অসাড় আনুষ্ঠানিকতা, তাই তাদের হৃদয় কঠিন হয়ে পড়লো, বেশিরভাগই দুর্নীতিগ্রস্ত। আল্লাহ্র ওহীতে আসলে কী বলা হয়েছে সেটা জানার ব্যাপারে তাদের আর আগ্রহ রইলো না। একদম এর পরের আয়াতেই আল্লাহ্ বলেছেন, اعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يُحْيِي الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا ۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
‘’জেনে রাখো আল্লাহ্ মৃত জমিনে আবার প্রাণের সঞ্চার করেন ।আমরা সুস্পষ্টভাবে আয়াতগুলো বর্ণনা করি যাতে তোমরা চিন্তা করতে পারো।‘’ আগের আয়াতটি ছিলো, হৃদয় কঠিন হয়ে গিয়েছে, একটি আধ্যাত্মিক সমস্যা এবং এরপর আয়াতটা শুনুন খেয়াল করে, যাতে তোমরা ভাবতে পারো।
অন্যভাবে বলতে গেলে, আমাদের আধ্যাত্মিক সমস্যা আমাদের বুদ্ধিমত্তার সমস্যা থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যাপার নয়। যখন আপনার মনন স্বচ্ছ হয়ে যায়, যখন আপনি দ্বীন নিয়ে পরিষ্কারভাবে ভাবতে পারেন, তখন তা আপনার হৃদয় পরিষ্কার করতে সাহায্য করবে। যখন আপনার হৃদয় পরিষ্কার হবে তা আপনার চিন্তাশক্তিকে স্পষ্টতা দেবে। এদুটো একটা অন্যটার সাথে সম্পর্কিত। এইজন্য ঊলামা যারা আল্লাহ্ তায়ালার এই গভীর বাণীটির উপর মন্তব্য করেছেন। বাণীটি হল .وَيُزَكِّيهِمْ আল্লাহ মানুষকে পবিত্র করেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের নিকট কুরআন তিলাওয়াত করার মাধ্যমে তাদের পবিত্র করেন। তারা এটা বুঝেছেন যে এই তাযকিয়া তথা পবিত্র করার দুটি দিক রয়েছে- আল্লাহ মানুষের চিন্তা করার পদ্ধতি পবিত্র করবেন এবং আল্লাহ তাদের হৃদয় পবিত্র করবেন। তাদের অভিপ্রায় পবিত্র করবেন। তিনি তাদের অন্তরের যন্ত্রণা দূর করবেন। তিনি তাদের কুপ্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করবেন। তাদের কামনা-বাসনার লাগাম টেনে ধরবেন। এবং সেই সাথে তিনি তাদের শেখাবেন যে কিভাবে সঠিক নিয়মে চিন্তা করতে হয়।
আমি এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করছি একটি বিশেষ কারণে। যখন আমি ভ্রমণ করি এবং আলহামদুলিল্লাহ শুধু আমেরিকাতে নয় আমেরিকার বাইরেও – আমি একটি সমস্যা সব জায়গায় লক্ষ্য করছি আমরা মুসলিম হিসেবে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেই। অন্ততঃপক্ষে আমরা বুঝতে পারছি আমাদের নিজেদেরকে এবং আমাদের সন্তানদেরকে ইসলাম সম্পর্কে জানতে হবে। কিন্তু যে সমস্যটা আমাদের হচ্ছে সেটা হলো, আমরা তথ্য সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি এটার ওপর যে আমাদের সন্তানদের কিছু দোয়া জানতে হবে, কিছু সুরা জানতে হবে, তাদের আরবীতে কুরআন পাঠ করতে জানতে হবে, তাজবীদ খুব ভালো হতে হবে এবং এসবই গুরুত্বপূর্ণ, এর কোনটিই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানে ‘ইলম’-এর ওপর, জ্ঞানের ওপর অনেক বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে এবং ঠিক একই সময় এই দুটো বিষয় একটুও গুরুত্ব পায়নি, একটি হলো কিভাবে অন্তর পরিষ্কার করতে হয় তথা আধ্যাত্মিক অবস্থা এবং দ্বিতীয়ত চিন্তার বিষয়ে, কিভাবে ভাবতে হয়।

অনুবাদ করেছেনঃ সানজিদা হাসনিন
ফেইসবুক ফ্যানপেইজঃ Nouman Ali Khan Collection In Bangla

Friday, December 26, 2014

ভৌতিক সংকলন ১- আমি এবং মামা


ঘটনাটি ৩-৪ বছর আগে আমার মামার সাথে ঘটছিলো।ঘটনাটি মামার ভাষাতেই

দিলাম।তখন রাত ১টা বাজে।দোকান বন্ধ করব।হঠাত্ মোবাইলে একটা কল
এল।দেখি বন্ধু শাহীন ফোন করেছে। ভাবলাম,এত রাতে ওর ফোন ,কাহিনী কি?ফোন ধরলাম।ধরেই
একটা দুঃসংবাদ শুনতে হল।ওর চাচা কিছুক্ষন আগে মারা গেছেন।কাল
সকালে তার জানাজা হবে।এখন মসজিদে মসজিদে গিয়ে হুজুরদের
বলতে হবে তারা যেন ফজরের ওয়াক্তে মাইকিং করে দেন।আমি ওর
সাথে যেতে পারব কিনা জানতে চাইল। আমি এককথায় রাজি হলাম।আধ ঘণ্টার
মধ্যে ওর বাসায় হাজির হলাম।তারপর দুজনে একসাথে বের হয়ে বিভিন্ন
মসজিদে যেতে লাগলাম।তখন ৩টা কি ৩’৩০টা বাজে।দুজনে এক
মসজিদ থেকে বের হয়ে আরেকটি মসজিদের
দিকে রওনা হলাম। যে মসজিদটিতে যাচ্ছিলাম
তাতে যেতে হলে মাঝখানে একটি ডোমপাড়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।
দুজনে ডোমপাড়ার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।বন্ধুর মন খারাপ
তাই সে কোন কথা বলছিল না।পাড়াটি অত্যন্ত নোংরা।রাস্তার
পাশে কিছুদূর পরপর স্ট্রিট লাইটপোস্ট। কিছুদূর এগোনের পর অদ্ভূত
অনুভূতি হতে লাগল,মনে হল কে যেন আড়াল থেকে আমাদের দেখছে।
শাহীনেরও যে একই অবস্থা হয়েছিল তা পরে জেনেছি।অস্বস্তি কাটাবার
জন্য দুজনে কথা বলতে বলতে এগোতে লাগলাম।
যেতে যেতে রাস্তার একটা মোড় ঘুরবার পর দেখি সামনে ১০-১২বছরের টাক
মাথার একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা একটু অবাক হলাম।এত রাতে এত
ছোট একটা ছেলে বাহিরে কি করছে? আমরা এগিয়ে গেলাম।পিচ্চিটাকে বললাম
এই তোর বাড়ি কই?এত রাতে এখানে কি করস?পিচ্চিটা কিছু
না বলে মাথা নিচু করে হাঁটা ধরল। এরপর
সে যা করল তা এককথায় অবিশ্বাস্য। সে রাস্তার পাশের ড্রেনের দিকে এগিয়ে গেল
এবং আস্তে আস্তে ড্রেনের মধ্যে পুরোপুরি ঢুকে গেল!!! আমরা সাথে সাথে দৌঁড়ে ড্রেনের
কাছে গিয়ে উকি দিলাম।কিন্তু পিচ্চিটার
ছায়াও দেখলাম না।এত তাড়াতাড়ি চম্পট দেয়া কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না।
তার চেয়েও বড় কথা হল ড্রেনটা এত
সরু যে কোন ১০-১২বছরের ছেলে সেটায় পুরোপুরি ঢুকতে পারবে না।
রাস্তার পাশের স্ট্রীট লাইটের আলোয় ঘটনাটা চাক্ষুষ করলাম।কেমন যেন ধোকা লাগল।যাই
হোক,ব্যাপারটা পাত্তা না দিয়ে চলতে লাগলাম। অদ্ভূত অনুভূতিটাও বহাল রইল।আরেকটু
এগোনের পর কি কারনে যেন একটা লাইটপোস্টের মাথার দিকে নজর
গেল।যা দেখলাম তাতে দম বন্ধ
হয়ে গেল।পোস্টের মাথায় ঝুলছে একটা লাশ,পিচ্চিটার লাশ!!!
এইবার বুঝতে পারলাম কিসের পাল্লায়
পড়েছি।শাহীনও লাশটা যে লক্ষ্য করেছে তাও বুঝলাম তার পরের কথায়।
সে শুধু বলল দোস্ত ,ভাগ।দুজনে দৌঁড় লাগালাম।কতদূর দৌড়াবার পর
থামলাম।
মনে হল বেঁচে গেছি।কিন্তু হঠাত্ করে শাহীনের চিত্কার।ওর
দিকে ঘুরে দেখি সে উপরের দিকে আঙুল
তাক করে আছে।উপরের দিকে তাকাতেই
দেহে কাঁপুনি ধরে গেল।সেই পোস্ট,সেই লাশ!!!চারপাশের পরিবেশও
চেনা মনে হল।একটু আগেই এখান থেকে পালিয়েছিলাম।মাট িতে ধুপ করে কিছু পড়ার শব্দ শুনে ঘুরে দেখি শাহীন মাটিতে পড়ে আছে।
হঠাত্ করে বিদঘুটে হাসির শব্দ শুনে পোস্টের
দিকে তাকিয়ে যা দেখলাম তা আমার কল্পনাতীত।পোস্ট ের মাথায়
কোন লাশ নেই!!!ঐটার নিচে দাঁড়িয়ে অট্টহাসি হাসছে পিচ্চিটা!!! হঠাত্ করে সে হ্যাঁচকা টান
দিয়ে নিজের মাথা ছিঁড়ে ফেলল!!!আলোতে স্পষ্ট দেখলাম চারপাশে রক্ত ছিটকে পড়ল।
কাটা মাথাটি পাগলের মত হাসতে লাগল।এরপর কাটা মাথা হাতে কবন্ধটি আমাদের
দিকে এগোতে লাগল।আমি আর সহ্য করতে পারলাম না।আল্লাহ আল্লাহ
করতে করতে চেতনা হারিয়ে ফেললাম। পরদিন যখন হুঁশ হয়
বুঝতে পারি আমরা একটা মসজিদে আছি। পরবর্তীতে জানতে পারি যে ফজরের
ওয়াক্তে মসজিদে আসার পথে আমাদের পড়ে থাকতে দেখে মুসল্লীরা আমাদের
মসজিদে নিয়ে এসেছে।এটা ছিল সেই মসজিদ যেটার
উদ্দেশ্যে আমরা রওনা হয়েছিলাম। ইমাম সাহেবের কাছে আমরা সব
কথা বললে তিনি বলেন যে ঐটা ছিল খারাপ প্রকৃতির প্রেত যা মানুষের পথ
ভুলিয়ে দিয়ে এবং ভয় দেখিয়ে ক্ষতি করে থাকে। তিনি আমাদের
রাতে বাইরে থাকতে নিষেধ করলেন।তার কথা আজও মেনে চলি।

সোর্সঃ https://chotogolpervandar.wordpress.com/2013/11/10/ভয়ংকর-ভুতের-গল্প

সংকল ১- একটা মিষ্টি প্রেমের গল্প (আখতারুজ্জামান সোহাগ)

ভীষণ কিউট দেখতে মেয়েটি। ফেসবুক একাউন্ট খুলতে খুলতে সে অনেক দেরি করে ফেলেছে। কিন্তু তাতে কি! খুব অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সে পেয়ে গেছে প্রায় সাতশ’র মতো বন্ধুতার আহবান। তার ইনবক্স ভর্ত্তি এত্ত এত্ত ক্ষুদেবার্তায়। অপরিচিত কারও বন্ধুতার আহবানে মেয়েটি সাড়া দেয় না। উত্তর দেয়না অপরিচিত কারও কাছ থেকে আসা ক্ষুদেবার্তারও। পাছে খাল কেটে কুমির আনা হয়ে যায়- এই ভয়ে।

একদিন হলো কি, মোটা কাচের চশমা পরা একটা ছেলের কাছ থেকে একটা বন্ধুতার আহবান এলো। একদম অচেনা ছেলেটি। তবুও কেন কে জানে মেয়েটি গ্রহণ করে ফেলল তার বন্ধুতার আহবান! 

তারা বন্ধু হলো। তাদের মধ্যে প্রায়ই ফেসবুক-মেসেঞ্জারে কথোপকথন হয়। কিন্তু একটাই সমস্যা। দু’জনের কথোপকথনের মাঝখানে ছেলেটি প্রায়ই ভুলভাল ইমো ব্যবহার করে বসে। যেমন, যখন মেয়েটি লেখে খুব সুন্দর একটা ড্রেস কিনেছি আজ, তখন উত্তরে ছেলেটি পাঠিয়ে দেয় মুখ বেজার করা একটা ইমো। তারপর এই ধরুন, অন্য আর একদিন মেয়েটি যখন লিখেছে জানো আমার খুব মন খারাপ, তখন ছেলেটি ছেড়ে দেয় একটা হাসির ইমো। মেয়েটি রেগে গিয়ে বলে, ‘এই ছেলে, তুমি উল্টাপাল্টা ইমো দাও কেন?’
‘কি করব বলো? আমি তো ঠিক মতো দেখতে পাই না চোখে। একটা বাটন চাপতে গিয়ে আর একটা চেপে ফেলি।’ বলে ছেলেটি।
মেয়েটিও যেন কেমন! ছেলেটি চোখে ঠিকমতো দেখতে পায়না শুনে কোথায় মন খারাপ করবে তা না, পাঠিয়ে দেয় একটা হাসির ইমো। 

এভাবেই চলে গেল যায় বছরখানেক। 
মেয়েটি একদিন ছেলেটিকে বলে, ‘তোমার সঙ্গে দেখা করতে চাই।’ 
ছেলেটি বলে, ‘অসম্ভব। আমি তোমার সামনে যাব না। মরে গেলেও না।’

সত্যি বলতে কি, ছেলেটির ভয় ছিল সামনাসামনি মেয়েটা তাকে দেখলে হয়তো মেয়েটি তাকে অপছন্দ করে দূরে সরে যাবে, আগের মতো আর কথোপাকথন হবে না, তাদের এই অম্লমধুর সম্পর্কটারও ইতি ঘটবে। তাই যেতে রাজি হয় না প্রথমটাতে। কিন্তু মেয়েটাও সহজে ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী নয়। ছেলেটিকে রাজি করিয়ে ফেলে, যেভাবেই হোক।

অবশেষে একদিন এলো সেই বিশেষ দিনটি। 
রমনা পার্কের বেঞ্চে মেয়েটি বসে আছে। ছেলেটিরও এখানে আসার কথা রয়েছে। আজই প্রথম তারা একজন আর একজনকে দেখবে। সামনাসামনি। এক সময় মেয়েটা দেখতে পেল, চোখে মোটা আর ঘোলা কাচের চশমা পরা ছেলেটা আসছে, তার চোখ মাটির দিকে। যেন হারিয়ে ফেলা কোন কিছু খুঁজে ফিরছে! মেয়েটি তাকে দেখেই চিনতে পারল। কিন্তু একি! ছেলেটি চলে যাচ্ছে তাকে পাশ কাটিয়ে, তাকে পিছনে ফেলে। লজ্জার মাথা খেয়ে মেয়েটি জোরে বলে উঠল, ‘এই ছেলে, কোথায় যাচ্ছ? আমি এখানে।’
ছেলেটি খুব লজ্জা পেয়ে বললো, ‘তুমি তো জানোই, আমি চোখে দেখি না ঠিকমতো।’

তারপর অনেকটা সময় কাটল পার্কের বেঞ্চিতে বসে। দু’জনে অনেক কথা হলো। তার অধিকাংশই এলোমেলো, ভীষণ রকমের অদরকারী। ঘড়ির কাঁটাগুলোও যেন বদ্ধ উন্মাদ, ত্রিশ সেকেণ্ডেই বানাতে লাগল এক একটা মিনিট। 

সন্ধ্যা ঘনানোর আগে মেয়েটি উঠে দাঁড়াল চলে যাবে বলে। হাঁটা শুরু করার আগে বললো ছেলেটিকে, ‘তোমাকে আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। তোমার হাত দু’টো একটু ধরতে দেবে?’
ছেলেটি চশমা খুলে চোখ মুছল।
‘এ কি, কাঁদছ কেন! তোমার তো খুশি হওয়ার কথা।’ বিস্মিত মেয়েটা জিজ্ঞেস করল।
‘সব সময় তো আমি ভুল ইমো’ই দিই। আজও না হয় তা’ই দিলাম।’ বললো ছেলেটি। তারপর হেসে উঠল।

বলতে ভুলে গেছি। রমনা পার্কে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল ঠিক এক বছর আগের আজকের এই দিনটাতে। দিনটা ছিল ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০১৩। বৃহষ্পতিবার।


Source: http://www.nokkhotro.com/post/139244-714352-ff0ea7-9f2658-.14031-640

রম্য সংকলন ৪- থ্রী ইডিয়টস - ফেসবুক ভার্সন (সেলিম মো: রুম্মান)

আমির খান : ( ক্লাসে বসে হাসছিলো ।) 
টিচার : আপনি হাসছেন কেন ? 
আমির : অনেকদিন থেকেই ফেসবুকের পেজ অ্যাডমিন হওয়ার ইচ্ছা ছিলো । আজ হয়েছি । খুব মজা লাগতেছে স্যার ! টিচার : বেশী মজা নেয়ার দরকার নাই । টেল মি , হোয়াট ইজ পোস্ট ? 
আমির : এনিথিং দ্যাট ইজ পোস্টেড অন ফেসবুক ইজ পোস্ট স্যার । 
টিচার : ক্যান ইউ প্লিজ এলাবোরেট ? 
আমির : স্যার , পাবলিক ফেবুতে যাই ই দেয় , তাই পোস্ট । ঘুরতে গেলাম , ফটো দিলাম । পোস্ট স্যার । ম্যাচ দেখতে গেলাম , স্কোর দিয়ে দিলাম । পোস্ট স্যার । আসলে পোস্ট আমাদেরকে চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে । ক্যাটরিনার পিক থেকে রোনালদোর কিক পর্যন্ত , সব পোস্ট স্যার ! এক সেকেন্ডে কমেন্ট , এক সেকেন্ডে লাইক । কমেন্ট-লাইক , কমেন্ট- লাইক! 
টিচার : শাট আপ ! অ্যাডমিন হয়ে এগুলা করবা ? কমেন্ট-লাইক , কমেন্ট-লাইক ? চতুর তুমি বলো তো । 
চতুর : পিকচার , টেক্সটস্ অর ভিডিওস পোস্টেড থ্রো মোবাইল অর ট্যাবলেট অর ল্যাপটপ অর ডেস্কটপ উইথ ডিফারেন্ট অপারেটিং সিস্টেম ইউজিং ইন্টারনেট অন ফেসবুক ইজ কলড্ আ পোস্ট। 
টিচার : বাহ ! 
আমির : কিন্তু স্যার , আমিও তো সেটাই বললাম সোজা ভাষায় । 
টিচার : সোজা ভাষায় বলতে চাইলে অন্য কোথায় গিয়ে বলো, পেজের অ্যাডমিন হয়ে নয়। 
আমির : কিন্তু স্যার অন্য অ্যাডমিন রাও তো... 
টিচার : গেট আউট ! 
আমির : ওহ , হোয়াই স্যার ? 
টিচার : সোজা ভাষায় বেরিয়ে যান । 
(আমির চলে যেতে গিয়ে আবার ফিরে আসবে) 
টিচার : কি হলো ? আমির : একটা কাজ ভূলে গেছিলাম স্যার । 
টিচার : কি ? আমির : এন ইউটিলিটি বাটন দ্যাট গিভ আস টু প্রোটেক্ট আওয়ার প্রাইভেট ডেটা , পিকচার , মেসেজ অর পার্সোনাল ইনফরমেশন ফর বিয়িং স্টোলেন অর ইউজড ফর ব্যাড পারপাস বাই হ্যাকারস অর অ্যানিওয়ান এলস্ । টিচার : কি বলতে চাও ?? 
আমির : লগআউট স্যার , লগআউট! করতে ভূলে গেছি ! 
টিচার : তো সোজা ভাষায় বলতে পারো না ? 
আমির : কিছুক্ষণ আগে ট্রাই করেছিলাম স্যার , কিন্তু সোজা সোজা আপনার পছন্দ হয় নাই !

রম্য সংকলন ৩- তেলবাজি

আমাদের ক্লাশে এক ছেলে পড়ে,নাম মুন্না।কথা বার্তায় খুবই ধীর স্থির ও ভদ্র(!) ছেলে,তবে মেয়ে দেখলে নজর একটু এদিক সেদিক হয়ে যায় আর কি,কি আর করবে বয়সের দোষ।
গল্পের আরেক চরিত্র আমাদের সবার প্রিয় চর্ম ও যৌন বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার+কবি বি.জামান স্যার(বিশাল ভুরি,এতোই বড় যে কোট পড়লে আর বোতাম লাগাতে পারেন না+মাথা ভর্তি পরচুলা )। তো স্যারের সাহিত্য প্রেম এমনই যে তিনি প্রতি বছর যেসব অখাদ্য কবিতা লিখবেন তা আবার উনি বিশাল এক অনুষ্ঠান করে সবাইকে ফ্রি চাইনিজ খাবার খাইয়ে তার প্রকাশ ঘটাবেন। (হে হে ফ্রি দিলে ছাড়ি কেমনে কন?)
তো এইসব অনুষ্ঠান আয়োজনে স্যারের ডান হাত হলো আমাদের মুন্না ভাই MBBS.
একদিন একটি অনুষ্ঠানের আগে স্যার মুন্নাকে ডাক দিলেন-
স্যার: মুন্না,এই সিডিটা রুমে নিয়ে যাও,এখানে আমার লেখা+সুর করা একটি গান একজন শিল্পীকে দিয়ে গাইয়েছিলাম,শুনে আমাকে জানাও তো কেমন হয়েছে।
মুন্না: স্যার,আমি না শুনেই বলে দিতে পারি এই গান রেডিও,টেলিভিশনে দিলে নং 1 হবে।তারপরেও আপনার কথায় রুমে গিয়ে আরও ভালো মত শুনবো।
তো মুন্না স্যারকে কিঞ্চিত পাম তেল দিয়ে নিজের রিক্সা ভাড়াটা আদায় করে নিলো।(পোলা এক পিস )
পরেরদিন—–
স্যার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে নিজের চেম্বারে ডেকেছেন,মুন্নাও হাজির।
মুন্না:স্যার,আপনাকে যে কি বলবো,আমি এতো সুন্দর গান আমার জীবনেও শুনি নাই।(তেলকূপ থেকে তেল নির্গমন শুরু হলো )
বর্তমানে যারা গান গায় এদের উচিত আপনার লেখা ও সুর করা গান গাওয়া।আপনি বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না স্যার,আমি রাত্রি ১২ টা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত বার বার আপনার এই শুনেছি,পড়ে গান শুনতে শুনতেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
মুন্নার মত স্বল্পভাষী,ভালো (!) ছেলের মুখে এহেন প্রশংসামূলক বক্তব্য শুনে স্যারের শার্টের বোতামগুলো ও মারে,বাবারে করা শুরু করে দিয়েছিলো,আর স্যারের ভুরিও রুমের ছাদ ছুই ছুই করছিলো।
স্যার: তাহলে তো মুন্না,আমার এই গানটি উপস্থিত সবাইকেই শুনাতে হয়।
মুন্না: মুখ একটু কাচু-মাচু করে,অবশ্যই স্যার।
তো স্যার সিডিটি নিয়ে উনার ল্যাপটপে ঢুকালেন কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও গান বাজাতে সক্ষম হলেন না।
(সবার ধারনা সিডিতে মনে স্ক্রাচ সংক্রান্ত ঝামেলা হয়েছে )
অবশেষে বিরক্ত হয়ে স্যার সিডিটি ল্যাপি থেকে বের করে ভালোমত চেক করে দেখলেন।তারপর মুন্নার দিকে তাকিয়ে বললেন-মুন্না,আমি তোমাকে ভুলে ব্ল্যাংক সিডি দিয়েছিলাম।
এই কথা শুনে উপস্থিত সবাই- …….

রম্য সংকলন ২- মিস কল (আসোয়াদ লোদি)

বাংলাদেশের এক কবি সেলফোনকে আদর করে ডেকেছিলেন মুঠোফোন বলে । মোবাইল ফোন কিংবা মুঠোফোন যে নামে ডাকি না কেন, আমাদের হাবলুর খুব শখ একটি মোবাইল ফোন কেনার । কিন্তু মোবাইল সম্পর্কে তার জ্ঞান একেবারে শূন্যের কৌটায় । ফলে সে বেশ চিন্তাযুক্ত অবস্থায় দিন যাপন করতে লাগল । 
হাবলুর বাড়ি কক্সবাজার জেলার দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি । সেখানে বিদ্যুৎ নেই, বিদ্যাশিক্ষা অর্জনের জন্য কোন ইস্কুলও নেই । শহুরে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল তাদের জীবনযাত্রা । গ্রামের মানুষ সহজ সরল না হাবাগোবা ঐ বিতর্কে না গিয়ে আমাদের হাবলুকে হাবাগোবা বলাই সঙ্গত । পিতামাতার তিরোধানে সে তুর্কি সুলতানদের ভাগ্যান্বেষণে ভারতবর্ষে আগমনের মত নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় কক্সবাজার শহরে চলে আসে । হাবলুর কপাল ভাল । কিছুদিন ঘোরাঘুরি করেই সমুদ্রের তীরে একটা রেস্টুরেন্টে টেবিল বয়ের কাজ পেয়ে গেল । ধীরে ধীরে কাস্টমারদের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরি হল তার । কাস্টমাররা হাবলুকে বেশ পছন্দও করে । 
কাস্টমাররা যখন চা পান করতে করতে মোবাইল ফোনে আলাপ করে, হাবলু তন্ময় হয়ে তাদের কথাবার্তা শুনে । সে লক্ষ্য করে অনেকে চাপাস্বরে কথা বলে, আবার কেউ কেউ কথা বলার সময় চিল্লায় । আবার অনেক লোককে দেখেছে গালাগালি করতে । সে বুঝতে পারে মোবাইল দিয়ে গালাগালিও করা যায় । এইটা একটা বেশ সুবিধা । সে মোবাইল কিনে প্রথমে তাদের গ্রামের মইত্যাকে গালাগালি করবে । মইত্যা তাকে একবার দিগম্বর করেছিল । সেকথা হাবলু আজও ভুলতে পারে নাই । 
এদিকে রেস্টুরেন্টের মালিকের কাছে হাবলুর তিন মাসের বেতনের টাকা জমা পড়ে আছে । সে মালিককে গিয়ে বলল, স্যার আমার বেতনের টাকাটা লাগব । 
মালিক জানতে চায়, এত টাকা দিয়ে কি করবি হাবলু ? 
সে সলজ্জ উত্তর দেয়, মোবাইল কিনুম স্যার ।
মোবাইল কিনবি ! মালিক কিঞ্চিত আশ্চর্য হলেন । তারপর হাবলুর সব পাওনা বুঝিয়ে দিলেন । ডিউটি শেষ করে হাবলু মোবাইল ফোন কিনে নিয়ে এল । সে এখন একটি মোবাইল ফোনের গর্বিত মালিক । খুশিতে তার বুক উঁচু হয়ে গেল । সে দ্রুত নিজের খুপরিতে ফিরে আসে। মোবাইল সেট হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ভাবতে লাগল মইত্যাকে গালাগালি করে নিলে ভাল হয় । সে সবুজ বোতাম চাপ দিয়ে কানের কাছে ধরল। তৎক্ষনাৎ শুনতে পেল একটি মিষ্টি মেয়েলি কন্ঠ । বলছে, আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা নেই । আপনার একাউন্ট রিচার্জ করুন । 
বারবার এই কথা শুনতে শুনতে হাবলু বিরক্ত হয়ে ধমক দিল । এই বেটি চুপ কর । আমি আগে একটু মইত্যারে গালি দিয়া লই । 
হাবলু অপেক্ষা করতে লাগল । বুঝল মেয়েলি কন্ঠ চুপ হয়ে গেছে । সে এবার মতিকে গালাগালি শুরু করল । এই মইত্যা হারামজাদা, খানকির পোলা তুঁই তো হাবলুরে চিনস নাই । আমি এখন মোবাইল কিনছি । তরে ডেইলি গালাগালি করব । এই কুত্তার পোলা কথা কস না কেন ? 
হাবলু বুঝতে পারে মতি ঘাবড়াই গেছে এ কারণে চুপ করে থাকছে । সে মনে মনে স্বস্থি পায় । সে তার এক বন্ধুর কাছে ফোন করার জন্য মোবাইল সেট আবার কানের কাছে ধরল এবং পূর্বের নারীকন্ঠ আবার শুনতে পেল । সে খুব চিন্তিত হয়ে ভাবতে লাগল কেন মেয়েটি বারবার একই কথা বলে যাচ্ছে । অগত্যা সে মালিকের শরণাপন্ন হলে মালিক জানায় মোবাইলে টাকা ভরতে হবে; না হয় কথা বলা যাবে না । 
মোবাইল কিনতেই হাবলুর সব টাকা শেষ হয়ে গেছে । তার পকেট একেবারে খালি । সে মালিকের কাছ থেকে বিশটাকা অগিম নিয়ে ফ্লেক্সিলোডের দোকানে চলে এল । দোকানিকে বলল, ভাই বিশ টেকা ভরেন । 
কত নম্বর ? দোকানি জিজ্ঞেস করে । 
হাবলু আমতা আমতা করে । সে ইংরেজি বাংলা মিশিয়ে নম্বরটি বলে । 
দোকানি বলে , ঠিক আছে আপনি চলে যান, আপনার কাজ হয়ে গেছে ।
হাবলু সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল দোকানির দিকে । কারণ সে দেখেছে দোকানি বিশটাকা ক্যাশ বাক্সে ভরেছে, মোবাইলে ভরে নাই । বুঝতে পারল সে ঠকবাজের পাল্লায় পড়েছে । সে রাগান্বিত হয়ে বলে, ভাই আপনি তো টেকা ক্যাশ বাক্সে ভরেছেন মোবাইলে ভরেন নাই । 
দোকানি অবাক হয়ে তাকাল হাবলুর দিকে । ভাবল নিশ্চয় ছেলেটির স্ক্রু ঢিলা । তিনি বললেন, এই টাকা ক্যাশ বাক্স থেকে আপনার মোবাইলে চলে যাবে । চিন্তার কারণ নেই । 
হাবলু ভাবে এখন তো দূর থেকে টেলিভিশন চালানো যায় । এটাও ঐরকম কোন কেরামতি হবে । সে দাঁড়িয়ে থাকলে দোকানি জিজ্ঞেস করে, আর কিছু বলবেন ? 
হাবলু বলে, আমার নম্বরটা কাগজে লিখ্যা দিবেন ? 
দোকানি কাগজ কলম নিয়ে জিজ্ঞেস করে, আপনার নাম কী ? 
হাবলু । 
দোকানি কাগজে হাবলু নামটি লিখে ও এর নিচে মোবাইল নম্বর লিখে হাবলুর হাতে দিল ।হাবলু খুশি মনে খুপরিতে ফিরে আসে । সে বালিশের তলা থেকে অনেক গুলো কার্ড বের করে আনে । এসব কার্ডে তার পরিচিত কাস্টমারদের নম্বর আছে । সে চিন্তা করল সবাইকে মোবাইল ক্রয়ের সংবাদটা জানানো উচিৎ । কিন্তু এতজনকে কল করতে গেলে তার সব টাকা শেষ হয়ে যাবে । সে আগেই জেনেছিল মিস কল দিলে টাকা কাঁটা যায় না । সে ভাবে মিস কলই দেবে । 
হাবলু প্রথমে বেছে বেছে সুমি আপুর নম্বরটি বের করল । সুমির নম্বরে রিং বাজছে । সুমি রিসিভ করে বলল, হ্যালো । 
হাবলু বলে, সুমি আপু আমি হাবলু । আমি মোবাইল কিনেছি । ভাবলাম আপনারে একটা মিস কল দিই । এইটা মিস কল দিলাম । পরে আপনার সাথে কথা বলব। এখন রাখি সুমি আপু । 
সুমি অনেক কষ্ট করে হাসি চেপে রেখে বলল, হে হাবলু খুব ভাল করেছিস মিস কল দিয়ে । তুঁই এভাবে মাঝে মাঝে মিস কল দিস । কেমন । 
আইচ্ছা সুমি আপু । তাহলে এখন রাখি । 
হাবলু লাইন কেটে দিল । সে সজলের নম্বরটি খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেল । সজল কল রিসিভ করতেই হাবলু বলল, হ্যালো সজল ভাইয়া আমি হাবলু । শুনেন আমি একটা নতুন মোবাইল কিনেছি । ভাবলাম আপনাকে মিস কল দিয়ে খবরটা জানাই । এইটা আপনাকে মিস কল দিলাম । 
সজল হাসতে হাসতে বলল, তুঁই নাকি সুমিকেও মিস কল দিয়েছিস ? 
সুমি আপু আপনাকে বলেছে ? 
হে । সে তো একটু আগে আমাকে ফোন করে জানাল । আর কাকে মিস কল দিয়েছিস ? 
এখনও আর কাউকে দিই নাই । 
ঠিক আছে তুঁই সবাইকে মিস কল দিতে থাক । আমি এখন রাখলাম । 
হাবলু এবার মতিন আংকেলের নম্বরে মিস কল দেয় । আরও কয়েকজনকে মিস কল দেয়ার পর সে ভাবল মিশু আপুকেও মিস কল দিয়ে খবরটা জানিয়ে দিলে ভাল হয় । কিন্তু মিশু আপুকে মিস কল দিতে গিয়ে হাবলু আবারও সে নারী কন্ঠস্বর শুনতে পেল । বলছে, আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণে টাকা নেই । অনুগ্রহপূর্বক আপনার একাউন্ট রিচার্জ করুন । 
হাবলু খুব অবাক হল । সে তো একটু আগে বিশ টেকা ভরেছে । তাহলে টেকাটা গেল কোথায় ? সে তো মিস কলই দিয়েছে । এখনও পর্যন্ত একটা ভাল কল করে নাই । হাবলু বুঝতে পারল এই বেটি ঠকবাজ । খালি টেকা ছাড়া আর কিছু চিনেনা । সে আবার চেষ্টা করল মিস কল দেয়ার জন্য । আবারও পূর্বের কন্ঠস্বর শুনতে পেল । হাবলু বলল, এই মাইয়া শুধু একবার কও হাবলু আমি তোমারে ভালোবাসি । তাহলে আমি আবারও বিশ টেকা ভরতে রাজী । 
পরদিন মিশু এলো রেস্টুরেন্টে । হাবলু কাপ প্লেট পরিষ্কার করে চা এনে দিল । মিশু বলল, হাবলু তুঁই তো আমাকে মিস কল দিলি না । 
হাবলু মুখভার করে জবাব দিল, আপু মিস কল দিতেও যে টেকা লাগে এইটা জানতাম না । 

রম্য সংকলন ১- গাধার বাচ্চা। --মুক্ত মানব(সামু ব্লগার)

সৈয়দ রহিম মিঞার মেজাজ ভীষণ খারাপ। তার একমাত্র ছেলে মন্টু মিঞা এইবার তৃতীয়বারের মত এস,এস,সি পরীক্ষা দিয়েছে। ফলাফল সম্ভবত একই। কারন আজ পরীক্ষার রেজল্ট হবার কথা। একারনেই হয়ত সকাল থেকেই মন্টুর কোন খোজ নেই। রহিম মিঞা মন্টুকে খুজে না পেয়ে যা বোঝার বুঝে নিয়েছেন। হতচ্ছাড়া, নালায়েক পোলা আবার ফেল করেছে। পোলাকে সামনে না পেয়ে রাগটা গিয়ে পড়ল স্ত্রীর উপর। কান ফাটানো শব্দে চেচিয়ে উঠলেন, “মন্টুর মা, ও মন্টুর মা. . . . গেলা কই। মরলা নাকি?” মন্টুর মা ই বা কম যায় কিসে? হাজার হোক, তিনি সৈয়দ বাড়ীর বউ। সমান তেজে জবাব দিলেন, “কি কইবা, কও। আমি শুনতাছি।“
- “তোমার নালায়েক পোলা কই পালাইছে?”
- “পোলা কি শুধু আমার? তুমি খোজ রাখবার পার না?
- “দেখ মন্টুর মা, তোমার লাই পায়া পায়া পোলা গোল্লায় গেছে। কই লুকায়া রাখছ কও? আইজ আমার সাধের লাঠি ওর পিঠে আমি ভাঙ্গুমই ভাঙ্গুম।“
- “কেন? আমার পোলায় কি করছে?”
- “কেন? তুমি বোঝ না? এত বেলা হইল পোলার কোন খবর নাই। আইজ পরীক্ষার রেজল্ট দিতাছে। গাধার বাচ্চা নিশ্চই ফেল করছে। না হইলে পলাইব কেন?”
- “তাইত কই! পোলা আমার পত্যেক বার ফেল করে কেন? গাধার বাচ্চা কোন সময় পাশ করবার পারে? গাধার বাচ্চাতো সারা জীবন গাধাই থাকে।“

রহিম মিঞা রাগের মাথায় ভুল করে মিসটেক করা বাক্যটার হাত থেকে রেহাই পেতে লাঠি হাতে ছেলের খোজে বের হয়ে গেল।

যথাসময়ে পরীক্ষার রেজল্ট পাবলিশ হল। রহিম মিঞার ধারণা সত্য প্রমাণ করার জন্যই মনে হয় অনেক খুজেও মন্টু তার রোল পাশকরা ছাত্রদের মধ্যে দেখতে পেল না। মনের মধ্যে দশ নম্বর বিপদ সংকেত শুনল। আর দেরী নয়, ঝেড়ে দৌড় লাগাল মন্টু মিঞা। পরবর্তী দৃশ্য বড়ই মনোরম। মন্টু মিঞা দৌড়াচ্ছে। পিছনে লাঠি হাতে রহিম মিঞা। সমান তালে চেচ্চাচ্ছেন তিনি। “ধর, ধর”।

মন্টু জান প্রাণ হাতে নিয়ে দৌড়াচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে মন্টুর বন্ধু হাবলু ভাবল মন্টু নিশ্চই বিপদে পড়েছে। নিশ্চই তারে পাগলা কুত্তা তাড়া করছে। না হইলে এই ভাবে দৌড় দিবে কেন? সে আপন মনে দৃশ্যটা কল্পনা করে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে লাগল। রহিম মিঞা হাবলুকে পাশ কাটনোর সময় তাকে এভাবে হাসতে দেখে অবাক হলেন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “কি হইছেরে হাবা? এমুন কইরা হাসতাছস কেন?” হাবলু হাসতে হাসতে জবাব দিল, “কুত্তার তাড়া খায়া মন্টু এমুন দৌড় দিছে! দেইখা হাসতাছি।“ রহিম মিঞা হুংকার ছেড়ে বললেন, “কি? আমি কুত্তা? এত বড় সাহস!” মুহুর্তের মধ্যে রহিম মিঞার লাঠির দু ঘা হাবলূর পিঠে পড়ল। আর হাবলু? কিছু বুঝতে না পেড়ে জান বাচাতে মন্টুর সঙ্গী হল।

এদিকে মন্টু দিক বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে দৌড়াতে গিয়ে ধাক্কা খেল পাশের বাড়ির হালিমের সাথে। হালিম আর মন্টু ধাক্কা খেয়ে চিৎপটাং। হালিম লাফিয়ে উঠে মন্টুকে জড়িয়ে ধরেই চিৎকার শুরু করল, “চোর! চোর!. . . .” মন্টু হালিমের হাতের চিপায় পড়ে চিও চিও করে বলে, “আমি চোর না। আমি মন্টু।“ হালিম মন্টুকে না ছেড়েই বলে, “ তাইলে এইভাবে চোরের লাহান দৌড় দিছিস কেন?” মন্টু হালিমের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য বলল, “দেখতেছিস না আব্বারে একটু দৌড় শিখাইতেছি। এইবার ছাড় নারে ভাই, আমি পালাই।“ হালিমের তবুও সন্দেহ যায় না। বলল, “একটু খাড়া। চাচা আসুক। আসল ঘটনা জাইনা লই।“ মন্ট ভাবল, ‘আমি এইবার শেষ।“ কি করা যায়? এমন সময় হালিম দেখল গগন বিদারী চিৎকার করতে করতে হাবলূ ছুটে আসছে। পিছনে লাঠি হাতে রহিম চাচা। মুহুর্তের মধ্যে মন্টুর হাত ছেড়ে সেও দৌড় দিল। পিছনে পড়ে রইল তার বিদায়ী বানী, ”চাচায় ক্ষেপছে।“ ছাড়া পেয়ে মন্টুইবা দেরী করবে কেন? সেও হাওয়া হল।

রহিম মিঞা বুড়া মানূষ। বেশিক্ষণ মন্টুর পিছে তাড়া করতে পারল না। সে হাটতে হাটতে এগিয়ে চলল। এই ফাকে মন্টু দৌড়ে তাদের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে নিল। এক পর্যায়ে দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত মন্টু একটা খরের গাদা দেখতে পেয়ে সেখানে আরাম করে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ল। মন্টু এস,এস,সি পরীক্ষা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু কোনদিন বই খুলে দেখছে কিনা সন্দেহ আছে। তাই সে খরগোশ আর কচ্ছপের গল্পটাও হয়ত জানে না। রহিম মিঞা হাটতে হাটতে খরের গাদার সামনে এসে হাজির হল। দেখল মন্টু আরাম করে ঘুমাচ্ছে। দেখে তার মেজাজ আরো খারাপ হল। মনে মনে ভাবল, “আমি সারাদিন হেটে বেড়াচ্ছি। আর নবাবজাদা আরাম করে ঘুমাচ্ছে।“ দেরী না করে হাতের লাঠি দিয়ে খোচা দিলেন তিনি। খোচা খেয়ে মন্টুর ঘুম একটু পাতলা হল। ঘুম জড়ানো কন্ঠেই সে বলল, “কোন শালারে?” এইবার রহিম মিঞা দু ঘা লাগিয়ে দিয়ে বললেন, “শালা না, আমি তোর বাপ।“ দু ঘা খেয়ে মন্টুর ঘুম বাপ বাপ করে পালাল। সেই সাথে সেও বাপ বাপ করে বলল, “আব্বাগো, এই বারের মত মাফ কইরা দাও। আমি আর জীবনেও ফেল করমু না।“ রহিম মিঞা আরোও দু ঘা লাগিয়ে বললেন, “গতবারও এই কতাই কইছিলি।“ মন্টু এই বার কাদতে কাদতে বলল, “আর কোন দিন কমু না। আবার যদি ফেল কার তবে তুমি কওনের সুযোগ দিও না। কওনের আগেই. . . . .“ রহিম মিঞা উত্তেজিত হয়ে বলল, “কি? কি কইতে চাস? কওনের আগেই তোরে জানে মাইরা ফালামু?” মন্টু ভয়ে ভয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, “না। আমি কইতে চাইছিলাম, কওনের আগেই মাফ কইরা দিও।“ রহিম মিঞার লাঠির আরো দু ঘা পড়ল মন্টুর পিঠে। মন্টু এইবার বাবার পা ধরে বলল, “এইবরের মত মাফ কর বাজান। দোষী তো খালি আমি একা না।“ রহিম মিঞা অবাক হলেন। বললেন, “দোষী তুই একা না, মানে?” মন্টু এবার কপট রাগ দেখিয়ে বলে, “সব দোষ বুঝি আমার? স্যারগরে দোষ নাই। স্যাররা যদি আমারে পড়াইতো, আমি কি ফেল করতাম?” রহিম মিঞা ভেবে দেখল, “তাইত! স্যারেরা যদি ঠিকমত পড়াইতো, তবে কি আর তার ছেলে ফেল করত? এইবার স্যারগরে ধরতে হইব।“ ছেলের হাত ধরে সে চলল হাইস্কুলের দিকে। এদিকে স্কুলের অংক স্যার কুদরত আলী প্রাইভেট পড়ানোর জন্য হাতে ছাতা ঝুলিয়ে সেই পথ দিয়েই যাচ্ছিল। স্যারকে দেখে রহিম মিঞা হাতের লাঠি উঠিয়ে ডাক দিল, “মাস্টার সাব, ও মাস্টার সাব।“ কুদরত স্যার ইতিমধ্যেই হাবলু আর হালিমের কাছে রহিম মিঞার ক্ষেপে ওঠার ঘটনা জেনে গেছে। লাঠি হাতে রহিম মিঞাকে ছুটে আসতে দেখে তার মনের মধ্যে কু ডাক ডেকে উঠল। তিনি আর দেরী করলেন না। উল্টা দিকে ঘুরে ঝেড়ে দৌড় লাগালেন। কিন্তু তার ভাগ্য হাবলু আর হালিমের মত ভাল হল না। অনভ্যস্ত শরীরে দৌড়াতে গিয়ে খেলেন আছাড়। আছাড় খেয়ে পায়ের জুতো কোথায় গেল কে জনে? ছাতাটাও গেল বাকা হয়ে। কোন মতে হাচরে পাচরে উঠে দাড়ালেন। ততক্ষণে রহিম মিঞা মন্টুকে নিয়ে পৌছে গেছেন। কুদরত স্যার পালানোর আর পথ পেলেন না। ছাতা সারা আর জুতো খোজায় মন দিলেন। রহিম মিঞা কাছে এসে জানতে চাইলেন, “ওকি মাস্টার সাব। ওভাবে দৌড় দিলেন কেন?” কুদরত স্যার নিজেকে সামলে নিয়ে বলরেন, “ও কিছু না। আমাদের গেম স্যার আমাকে সকালে আধাঘন্টা আর বিকালে আধাঘন্টা করে এক ঘন্টা দৌড়াতে বলেছেন। তাইলে নাকি আমার শরীর ভাল থাকবে।“ ত্যাদর মন্টু হেসে বলল, “কিন্তু স্যার, এখনওতো বিকাল হয় নাই। এখন দুপুর বলা চলে।“ “চুপ কর বেয়াদব।“ কুদরত স্যার ধমকে উঠলেন। “তুই জানিস না, আমি অংকের স্যার। আমি অংক কষে বের করলাম, গড়ে সকালে ২০ মিনিট, দুপুরে ২০ মিনিট আর বিকালে ২০ মিনিট দৌড়ালে আমার একঘন্টা দৌড়ানো হবে। তাই সেভাবে দৌড়াই।“ এরপর রহিম মিঞার হাতের লাঠি দেখিয়ে কুদরত স্যার জানতে চাইলেন, “ওটার কাজ কি? লাঠি নিয়ে ঘুড়ছেন কেন? রহিম মিঞা দাত কিরমির করে বললেন, “গাধা পিটামু।“ এইবার কুদরত স্যার রেগে গেলেন। বললেন, “দেখেন, বিনা কারনে লাঠি নিয়ে তাড়া করলেন। আবার গাধা বলে গালি দিচ্ছেন। ভাল হচ্ছে না কিন্তু।“ রহিম মিঞা অবাক হয়ে বললেন, “আমি আবার আপনারে তাড়া করলাম কখন? আর গাধাই বা বললাম কখন? আমিতো গাধা কইছি আমার পোলা মন্টুরে।“ কুদরত স্যার হাফ ছেড়ে বাচলেন। বললেন, “কেন, কেন? মন্টুকে গাধা বলছেন কেন? কি করেছে আমাদের মন্টু?” রহিম মিঞা বললেন, “কি করেছে মানে? কি করে নাই সেইটা কন?” কুদরত স্যার তারাতারি শুধরে নিয়ে বললেন, “কি করে নাই মন্টু?” রহিম মিঞা দ্বীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, “পাশ। পাশ করে নাই মন্টু।“ কুদরত স্যার হতাশ গলায় বলেন, “আবারও ফেল।“ মন্টু দাত বের করে হাসতে হাসতে স্যারের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করে বলল, “জ্বী স্যার, আপনাদের বদ দোয়া।“ কুদরত স্যার লাফিয়ে তিন হাত পিছনে সরে গিয়ে বললেন, “বদ দোয়া মানে?” মন্টু দাত বের করেই উত্তর দিল, “স্যার, পাশকরা ছাত্ররা আপনাদের পায়ে হাতদিয়ে সালাম করে বলে ‘আপনাদের দোয়ায় পাশ করছি’। তাই আমি কইলাম, আপনাদের বদ দোয়ায় ফেল করছি।“ কুদরত স্যার ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলেন। আর রহিম মিঞা দ্বিতীয় বারের মত মন্টুকে বললেন, “গাধার বাচ্চা।“

তুই কি আমার দুঃখ হবি – আনিসুল হক

তুই কি আমার দুঃখ হবি?
এই আমি এক উড়নচন্ডী আউলা বাউল
রুখো চুলে পথের ধুলো
চোখের নীচে কালো ছায়া।
সেইখানে তুই রাত বিরেতে স্পর্শ দিবি।
তুই কি আমার দুঃখ হবি?
তুই কি আমার শুষ্ক চোখে অশ্রু হবি?
মধ্যরাতে বেজে ওঠা টেলিফোনের ধ্বনি হবি?
তুই কি আমার খাঁ খাঁ দুপুর
নির্জনতা ভেঙে দিয়ে
ডাকপিয়নের নিষ্ঠ হাতে
ক্রমাগত নড়তে থাকা দরজাময় কড়া হবি?
একটি নীলাভ এনভেলাপে পুরে রাখা
কেমন যেন বিষাদ হবি।

তুই কি আমার শুন্য বুকে
দীর্ঘশ্বাসের বকুল হবি?
নরম হাতের ছোঁয়া হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি।
নিজের ঠোট কামড়ে ধরা রোদন হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি।
প্রতীক্ষার এই দীর্ঘ হলুদ বিকেল বেলায়
কথা দিয়েও না রাখা এক কথা হবি?
একটুখানি কষ্ট দিবি।
তুই কি একা আমার হবি?
তুই কি আমার একান্ত এক দুঃখ হবি?

কৌতুক সংকলন ২: গোপাল ভাড়ের গল্প--ভাগবানের বিশ্বাস

খন্ড ১-
গোপাল যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি। মাথার ওপর গনগনে সূর্য। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গোপাল এক গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে বসল। বেশি গরম লাগায় ফতুয়াটা খুলে পাশে রেখে একটু আয়েশ করে বসল। বসে বিশ্রাম নিতে নিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল, নিজেই জানে না। 
ঘুম যখন ভাঙল গোপাল দেখে, তার ফতুয়াটা চুরি হয়ে গেছে। হায় হায়! এখন কী হবে! খালি গায়ে তো আর শ্বশুরবাড়ি ওঠা যায় না। কী আর করা। সে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে বলতে লাগল, ‘হে ভগবান, রাস্তায় অন্তত ১০টি মুদ্রা যেন কুড়িয়ে পাই, তাহলে পাঁচ মুদ্রায় আমার জন্য একটা ভালো ফতুয়া কিনতে পারি। আর তোমার জন্য পাঁচটি মুদ্রা মন্দিরে দান করতে পারি···।’ আর কী আশ্চর্য! ভাবতে ভাবতেই দেখে, রাস্তার ধারে কয়েকটি মুদ্রা পড়ে আছে। খুশি হয়ে উঠল গোপাল, গুনে দেখে পাঁচটি মুদ্রা! গোপাল স্বগত বলে উঠল, ‘হে ভগবান, আমাকে তোমার বিশ্বাস হলো না, নিজের ভাগটা আগেই রেখে দিলে? 


খন্ড ২-
গোপাল একবার তার দুই বেয়াই-এর সাথে এক জায়গায় যাচ্ছিল। পথের ধারে দক্ষিণমুখো হয়ে সে প্রস্রাব করতে বসলে এক বেয়াই বলল, “আরে করেন কি, আপনি জানেন না, দিনের বেলা দক্ষিণমুখো হয়ে প্রস্রাব করতে নেই, শাস্ত্রে নিষেধ আছে যে!” 
অপর বেয়াই বলল, “শুনেছি উত্তরমুখো হয়েও নাকি ওই কাজটি করতে নেই।” 
গোপাল বলল, “ওসব পন্ডিতলোকদের বচন, আমি গাঁইয়া মুখ্যুসুখ্যু মানুষ, ওসব বাছবিছার আমি করি না, সব মুখেই প্রস্রাব করি। বড় বেয়াই যে মুখে বললেন সে মুখে করি আর ছোট বেয়াই যে মুখে বললেন সে মুখেও করি।” 
গোপালের মুখের কথা শুনে বেয়াইদের মুখে আর কথা নেই।


কৌতুক সংকলন ১: ৫ টি মজার দম ফাটানো হাসির কৌতুক।

কৌতুক ১। 
এক লোক বিয়ে.
করবে বলে মেয়ে দেখতে গেছে....
লোকটার
একটা সমস্যা ছিল,.
সে 'ক' কে 'প' বলত !!
মেয়ের
অভিভাবক.
ছেলেকে জিজ্ঞাসা করল... :তোমার
নাম কি?
:আমার নাম পাদের ।
(মানে কাদের) এই
কথা শুনে মেয়ে কেদে উঠল।
.
তখন
মেয়েটিকে কাদতে দেখে ছেলেটি তাকে সান্তনা দিতে গিয়ে বলল. . . . . . . . . . .
তুমি পাদছ
পেন,পাপলি?
(মেয়ের নাম কাকলি)
পাপলি,পাপলি তুমি আর
পেদনা...
তুমি পাদলে আমিও
পিন্তু পেদে দেব ।
আর আমি পাদা শুরু
পরলে পেও আমার
পাদা থামাইতে পারবে না....

কৌতুক ২।
শিক্ষক ছাত্রদের উদ্দেশে বললেন, ‘আমি ঠিক করেছি, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে অলস যে, তাকে পড়া দিতে হবে না। কে সবচেয়ে অলস? ৪৯ জন ছাত্র হাত তুলল। স্যার হাত না তোলা ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি হাত তুলছ না কেন?’
ছাত্র জবাব দেয় স্যার, হাত তুলতে কষ্টহয়।

কৌতুক ৩।
এক মেয়ের বিয়ে হচ্ছে ।
সেখানে তার প্রাক্তন
প্রেমিকও এসেছে !!
তাদের ব্রেকাঅপ
সম্পর্কে অজ্ঞ এক
লোক এসে জিজ্ঞেস করল...
--আপনিই কি বর ?
প্রাক্তন প্রেমিকঃ “না রে ভাই !!
আমি তো সেমিফাইনালেই
বাদ হয়ে গেছি,
ফাইনাল দেখতে আসছি !!

কৌতুক ৪।
এক চোর এক জুতার
দোকানে চুরি কইরা ধরা খাইছে।
কিছু মারধোর করে মালিক
তাকে
ছেড়ে দিল।।
কিছু দিন পর সে আবার ওই
দোকানে চুরি করতে আসলো
এবং এবারও ধরা খাইলো,
মালিক বলল : তোর শরম নাই ?
তুই আবার আসছোছ।
চোর বলল : আমার দোষ কি?
দোকানের সামনে লেখা, 
ধন্যবাদ আবার আসবেন।।

কৌতুক ৫।
মা :কিরে, দাড়িয়ে ভাত
খাস কেন?
রাজিব:এখন থেকে দাড়িয়েই খাবো।
মা :কেন?
রাজিব:এই অপমান আর সহ্য হয়না। বাবা প্রত্যেকদিন বলে,এত
বড় ছেলে বসে বসে খায়, তাই 




Tuesday, December 23, 2014

"মিহিতের জীবন সূর্য" এ,আর,এম, হাসান-উর-রশিদ

"মিহিত", জন্মের পরে বোধশক্তি হওয়ার পরে তার বাবা কেই শুধু দেখে আসছে, মা কি, দেখতে কেমন হয় কিছুই জানে না সে, কৌতূহল মেটানোর তাগিদে বাবাকে একবার মায়ের কথা জিজ্ঞেস করেছিল সে, কিন্তু তার বাবা তাকে প্রত্যুতরে এটুকুই বলল, "তোমার মা আমিই।" তৃষ্ণার্ত মন তবু ভরে নি মিহিতের, সে পাল্টা প্রশ্ন করে বসলো, "তুমি তো বাবা, মা'রা তো শাড়ি পরে, আমার সব বন্ধুর মা'য়েরা তো শাড়ি পরেই ওদের স্কুলে নিয়ে আসে, তুমি তো শাড়ি পরো না, তুমি মা হও কিভাবে?" কিন্তু মিহিতের কৌশলী বাবা প্রশ্নের উত্তরে বলল, "তোমার মা ও বাবা একজনই, এই ব্যাপারে আর কখনো প্রশ্ন করবে না আমাকে।" মিহিতকে এভাবে কথাটা বলে তার বাবা ফাহিয়ান আহমেদের মনটা বিষণ্ণ হয়ে গেলো, তিনি ভাবছেন ছেলেটাকে এভাবে না বললেও পারতেন, কথা গুলো অনেক কঠিন হয়ে গেছে।

মিহিতের জন্মের ঠিক দেড় বছরের মাথায় তার মা মারিয়া জাহান পুরনো প্রেমিকের সাথে চলে যায় মিহিতের বাবা'কে ডিভোর্স লেটার দিয়ে। ফাহিয়ান সাহেব বিয়ের ঠিক পরেই বুঝতে পেরেছিলেন যে তার স্ত্রী'র অন্য কারো সাথে প্রনয় আছে, কিন্তু তিনি তখন ভেবেছিলেন বিয়ের আগে সব মেয়েরই এমন প্রনয় থাকে এবং তা বিয়ের পরে ভুলে যায়, তিনি কস্মিনকালেও ভাবতে পারেন নি মারিয়া দেড় বছরের মিহিতকে রেখে এভাবে চলে যাবে পুরনো প্রেমিকের হাত ধরে ভালোবাসার ক্ষুধা মেটাতে। অনেক কষ্ট করে তিনি মিহিতকে বড় করছেন শত ঝড় ঝাপটা সামলে, বিয়েও করেন নি ছেলের প্রতি অনাদর হওয়ার আশংকায়।

মিহিত আজ ১৩ বছরের এক দুরন্ত বালক, ক্রিকেট তার প্রিয় খেলা, তার বাবা তাই তাকে তার ৮ বছর বয়সের মাথায় আবাহনী ক্রিকেট ক্লাবে ভর্তি করিয়ে দেয়। মিহিত খুব গতিতে বোলিং করতে পারে, সে তার দলের লিডিং বোলারও। আজ তার দলের খেলা চলছে মোহামেডান ক্রিকেট ক্লাবের সাথে, অনূর্ধ্ব-১৩ ক্রিকেট ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনাল খেলা, মিহিতের দল ২০ ওভারে ১৬০ রান তোলে, ১৬১ রানের লক্ষ্যে নেমে মোহামেডান খেলতে খেলতে শেষ ওভার পর্যন্ত গিয়ে এক টানটান উত্তেজনায় পৌছায়, শেষ ওভারে দরকার ১২ রান ৬ বলে, বোলার "মিহিত", মিহিতের মাথায় তখন একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে, "সব গুঁড়িয়ে দিবো।" প্রথম ৫ বলে সে ৮ রান দেয়, শেষ বলে দরকার ৪ রান, মিহিতের ভাবনায় শুধু জয়, যেভাবেই হোক তাকে এই বলে ৪ রান দেয়া চলবে না, শেষ বলটি সে স্ট্যাম্পের ব্লক হোলে ইয়র্ক করার চেষ্টা করলো, কিন্তু একটুর জন্যে বলটা ইয়র্ক না হয়ে খানিকটা লোয়ার ফুলটস হয়ে গেলো, ব্যাটসম্যান সজোরে স্ট্রেট ড্রাইভ করলো, মিহিত ডানদিকে ঝাপিয়ে ক্যাচ ধরার চেষ্টা করলো, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বলটা হাতে না এসে তার মাথায় আঘাত করলো, সঙ্গে সঙ্গে সে অজ্ঞান হয়ে গেলো। মিহিতের তীব্র রক্তক্ষরণ হচ্ছে, তাকে হসপিটালে আই.সি.ইউ. তে নেওয়া হলো। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মিহিত, তার বাবা অঝোরে কাঁদছে, ফাহিয়ান সাহেবের পৃথিবী শূন্য লাগছে, ডাক্তারদের জোড়হাতে বলছেন তার সন্তানকে যেভাবেই হোক যত টাকাই লাগুক তার মিহিত কে যেন ভালো করে দেয়।

এদিকে মিহিতের মা মারিয়া অনলাইন পত্রিকায় হঠাৎ পড়লেন অনুরধ-১৩ ক্রিকেট ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি-ফাইনাল খেলায় মাথায় বল লেগে আহত হয়ে মিহিত নামে এক কিশোর তুর্কি হাসপাতালের বেডে পাঞ্জা লড়ে যাচ্ছে, তার বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো, এই মিহিত কোন মিহিত? মারিয়া খবর নিয়ে দেখলো এই মিহিত আসলে সেই মিহিত যাকে দশ মাস দশ দিন গর্ভে লালন করে তিনি জন্ম দিয়েছেন, আর দেড় বছরের মাথায় সকল মায়া মমতা ভুলে নিজের ভালোবাসার মোহে ভুলে ছেড়ে চলে এসেছেন। নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না মারিয়া, নাড়ির তীব্র টানে ছুটে গেলেন মিহিতের কাছে।

মিহিতের জ্ঞান ফিরেছে তবে অবস্থা খুবই আশংকাজনক ডাক্তার মাত্র খবর দিলো ফাহিআন সাহেবকে, ডাক্তার ফাহিয়ান সাহেবকে মিহিতের পাশে যেতে বললেন। ফাহিয়ান সাহেব গেলেন বুকের মানিকের কাছে, পুরো মাথায় সাদা ব্যান্ডেজে আবৃত তার সন্তানের, চোখ আধো আধো খোলা, অস্ফুট স্বরে মিহিত তার বাবা কে বলল, "মা দেখতে কেমন হয়?" কোথায় ছেলেকে তিনি সাহস দিবেন তার বদলে মিহিতের প্রশ্ন শুনে ফাহিয়ান সাহেব শিশুর মত কাদতে লাগলেন, ঠিক তখনি মারিয়া মিহিতকে দেখতে রুমে ঢুকলো, অশ্রুসজল অপরাধী চোখে ছেলের পাশে বসলেন ফাহিয়ান সাহেবের দিকে না তাকিয়ে। মিহিত তার বাবা'কে জিজ্ঞেস করলো, "বাবা ইনি কে?" ফাহিয়ান সাহেব বললেন," তোমার মা দেখতে এই মহিলার মতো।"

মিহিত তার অনেক দিনের খুজতে থাকা প্রশ্নের উত্তর পেলো অবশেষে, সে মারিয়া'কে বললো, "মা তুমি দেখতে আমার কল্পনায় আঁকা মায়ের চেয়েও সুন্দর, তুমি কি আবারো চলে যাবে আমাকে ছেড়ে মা?" এই কথা বলেই মিহিতের জীবনের সূর্য লাল হয়ে পশ্চিমে ডুবে গেলো।

পাশের বেডের ছেলেটা -- তৌফিক আনজাম

মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই যখন দেখি আমার পাশের বেডের ছেলেটার সব মিলিয়ে মাসিক খরচ মাত্র ৩০০০ টাকা । আর এই ৩০০০ টাকা কোথা থেকে আসে জানেন ? ওই দূরে বাড্ডা, মতিঝিল কিংবা শ্যামলি কোন একটি বাসার কোন এক ছাত্র কে পড়িয়ে ।
ছেলেটার বাসা সেই নিভৃত পল্লীতে । বাবা গরিব কৃষক । মাঝে মাঝে যখন ভর্তি ফি কিংবা অন্য কারনে বেশি টাকার প্রয়োজন হয় ছেলেটা বেশ ইতস্তত করে দরিদ্র পিতার কাছে টাকা চাইতে । বাবা হয়তো বাড়ীর কোন একটা ছাগল বিক্রি করে টাকাটা পাঠায় । ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । একদিন নিশ্চয়ই ছেলে বড় অফিসার হবে, সেদিন হয়তো এই দুর্দিন থাকবে না । এজন্যে কষ্ট করে টাকা পাঠাতেও কষ্টটাকে কষ্ট মনে হয়না পিতার ।
ছেলেটার শার্ট মাত্র দুটা । সেই দুটা শার্ট চলছে বহুদিন । বন্ধুরা সবাই যখন এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করে তখন মাঝে মাঝে রাস্তায় সবাই মিলে এটা সেটা খায় । তাকে অনেকেই সাধাসাধি করে , সে নানা অজুহাত দেখায় । বিলাসিতা করার তার সুযোগ নেই । সন্ধ্যা হয়ে গেলে মাঝে মাঝে ছেলেটা একা একা হাটতে বের হয় । ক্যাম্পাসের নানা ধরণের মানুষগুলোর উচ্ছাস আর হাসিমুখ দেখে নীরবে । টিএসসির মোড়ে এসে ছেলেটার মাঝেমাঝে মনে হয় আহা মানুষের জীবনগুলো কত আনন্দের । লাইব্রেরীর সামনে ৫ টাকার একটা পাকোড়া খেয়ে এক সময় হেটে হেটে চলে আসে হলের দিকে । হলের বন্ধু গুলো এতো ভালো কেন ? একবার তার অনেক জ্বর হলো । সেবার বন্ধুরা পালাক্রমে খুব সেবা করেছিলো । এদের জন্য মাঝে মাঝে জীবন দিতে ইচ্ছা হয় ছেলেটার ।
গ্রাম থেকে আসা ছেলেটার মুখের ভাষা থেকে আঞ্চলিকতার ছাপ গুলো ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে । বাবা মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনে জানতে চায় ছেলের কোন সমস্যা আছে কিনা । ছেলেটা হাসে আর বাবাকে আশ্বাস দেয় “না বাজান সমস্যা নাই”
একদিন কথাচ্ছলে যখন জানতে চাইলাম জীবনের লক্ষ্য কি ? ছেলেটা ফিক করে হেসে দিলো । শুধু বলল, আপাতত পরিবারটাকে একটা শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে চায় । আমি জানি, এই ছেলেটা একদিন অনেক বড় হবে ।
একদিন ক্লাসের এক শিক্ষক বলছিলেন , “দেশে এখনো এরকম একটা বিদ্যাপীঠ আছে যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দরিদ্র ছেলেরা এসে পড়তে পারে । এটি না থাকলে যে কি হতো” ...
যখন খুব হতাশ হয়ে পড়ি , জীবন নিয়ে শঙ্কাগ্রস্থ হই তখন এই বন্ধুগুলোর দিকে তাকাই । কত সংগ্রাম করছে তারা জীবনে দাঁড়ানোর জন্য । মাঝে মাঝে নিজেকে নিয়ে গর্বও হয় যে আমি এরকম ফাইটারদের সাথে পড়াশোনা করি । আশা ফিরে পাই এই ভেবে যে এদের দেখে হয়তো একদিন কিছু একটা তো হতে পারবো ।
এই ছেলেটার গল্পটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকের জীবনের সাথে মিলে যাবে , জীবন যুদ্ধের এই গল্প গুলো লেখা হয় হলের ছোট ছোট রুম গুলোতে । এগল্পগুলো অপ্রকাশিত থাকে । যেদিন প্রকাশিত হয় সেদিন ওই ছেলেটা অনেক বড় হয়ে গেছে ।
তখন অবাক বিস্ময় নিয়ে মানুষের মুখে মুখে শোনা যায় , জানিস ইনি ছাত্র জীবনে এরকম স্ট্রাগল করেছেন !!!